দেশজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা: আগামী ১১ দিনে নাশকতার আশঙ্কা, দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান

 



আগামী ১১ দিনে দেশে কি এমন ঘটতে চলেছে ?

ঢাকা, ৩১ জুলাই, ২০২৫: দেশজুড়ে আগামী ১১ দিন, অর্থাৎ ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে পাঠানো এক গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ বার্তার মাধ্যমে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিটকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত 'জুলাই অভ্যুত্থানে'র বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ কর্তৃক দেশব্যাপী সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বিশেষ সতর্কতার কারণ:

গোয়েন্দা সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে। পুলিশের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন ও অফলাইনে উস্কানিমূলক প্রচারণা চালিয়ে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশ এবং বিদেশ থেকে একটি গোষ্ঠী এই কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করছে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।... যারা দেশে-বিদেশে বসে পরিস্থিতি অশান্ত করার পরিকল্পনায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

কী ঘটতে চলেছে আগামী ১১ দিনে:

এই সর্বোচ্চ সতর্কতার অংশ হিসেবে দেশব্যাপী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো চলমান থাকবে:

  • বিশেষ অভিযান: দেশজুড়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এই সময়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং সন্দেহভাজন স্থানগুলোতে তল্লাশি চালানো হবে।

  • কঠোর তল্লাশি: রাজধানীসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন এবং বিমানবন্দরে কড়া নজরদারি ও তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ সন্দেহভাজন সব যানবাহনে তল্লাশি করা হচ্ছে।

  • নিরাপত্তা জোরদার: সরকারি-বেসরকারি সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অন্যান্য কেপিআই (গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা) সমূহে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

  • গোয়েন্দা নজরদারি: সাইবার স্পেসে উস্কানিমূলক প্রচারণা রুখতে সাইবার পেট্রোলিং এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

সাইবার হামলার আশঙ্কা:

রাজনৈতিক অস্থিরতার এই আশঙ্কার পাশাপাশি, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে বড় ধরনের সাইবার হামলার সতর্কতা জারি করেছে। ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের তথ্যপ্রযুক্তিগত নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জনসাধারণকে এই সময়ে কোনো ধরনের গুজব বা উস্কানিতে কান না দেওয়ার জন্য এবং সন্দেহজনক কোনো কিছু চোখে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post